প্রশ্ন ৪: সূরা আল-ক্বারি‘আহ পাঠ কর এবং তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: সূরা আল-ক্বারি‘আহ এবং তার ব্যাখ্যা:

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ রহমান ও রহীম আল্লাহর নামে।

الْقَارِعَةُ: “ভীতিপ্ৰদ মহা বিপদ (১) مَا الْقَارِعَةُ : ভীতিপ্ৰদ মহা বিপদ কী? (২) وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْقَارِعَةُ: আর ভীতিপ্ৰদ মহা বিপদ সম্পর্কে আপনাকে কিসে জানাবে? (৩) يَوْمَ يَكُونُ النَّاسُ كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوثِ: সেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত। (৪) وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ الْمَنْفُوشِ: আর পর্বতসমূহ হবে ধুনিত রঙ্গিন পশমের মত। (৫) فَأَمَّا مَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ: অতঃপর যার পাল্লাসমূহ ভারী হবে। (৬) فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ: সে তো থাকবে সন্তোষজনক জীবনে। (৭) وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ: আর যার পাল্লাসমূহ হালকা হবে। (৮) فَأُمُّهُ هَاوِيَةٌ: তার স্থান হবে ‘হাওয়িয়াহ’। (৯) وَمَا أَدْرَاكَ مَا هِيَهْ: আর আপনাকে কিসে জানাবে সেটা কী? (১০) نَارٌ حَامِيَةٌ: অত্যন্ত উত্তপ্ত আগুন।” (১১) [সূরা আল-ক্বারি‘আহ: ১-১১]

তাফসীর:

১- الْقَارِعَةُ: “ভীতিপ্ৰদ মহাবিপদ।”: যখন তার ভয়াবহতার কারণে মানুষের হৃদয়সমূহ আঘাতপ্রাপ্ত হবে?

২- مَا الْقَارِعَةُ : “ভীতিপ্ৰদ মহাবিপদ কী?”: সেই সময়টি আসলে কী, যখন তার ভয়াবহতার কারণে মানুষের হৃদয়সমূহ আঘাতপ্রাপ্ত হবে?

৩- وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْقَارِعَةُ: “আর ভীতিপ্ৰদ মহাবিপদ সম্পর্কে আপনাকে কিসে জানাবে?”: হে রাসূল! কোন বস্তু আপনাকে সে বিষয়ে অবহিত করবে যে, সেই সময়টি আসলে কী, যখন তার ভয়বহতার কারণে মানুষের হৃদয়সমূহ কেপে উঠবে? নিশ্চিতভাবে সেটি হচ্ছে কিয়ামাতের দিন।

৪- يَوْمَ يَكُونُ النَّاسُ كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوثِ: “সেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত।”: সেটি এমন একটি দিন, যেদিন মানুষের অন্তরসমূহ প্রকম্পিত হতে থাকবে আর তারা তেমনি হবে, যেমনভাবে কীট-প্রত্যঙ্গগুলো এখানে সেখানে বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত আকারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।

৫- وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ الْمَنْفُوشِ: “আর পর্বতসমূহ হবে ধুনিত রঙ্গিন পশমের মত।”: সেদিন দ্রুত চলাচল ও নড়াচড়ার কারণে পাহাড়-পর্বতসমূহ ধুনাই করা পশমের ন্যায় হয়ে যাবে।

৬- فَأَمَّا مَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ: “অতঃপর যার পাল্লাসমূহ ভারী হবে।”: তখন যার সৎকাজসমূহ তার পাপকাজের উপরে প্রাধান্য পাবে।

৭- فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ: “সে তো থাকবে সন্তোষজনক জীবনে।”: সে এক সন্তোষজনক জীবনের মধ্যে থাকবে, যা সে জান্নাতে লাভ করবে।

৮- وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ: “আর যার পাল্লাসমূহ হালকা হবে।”: পক্ষান্তরে যার পাপকাজ তার সৎকাজের উপরে প্রাধান্য পাবে।

৯- فَأُمُّهُ هَاوِيَةٌ: “তার স্থান হবে ‘হাওয়িয়াহ’।”: কিয়ামাতের দিনে তার অবস্থান ও বাসস্থান হবে জাহান্নাম।

১০- وَمَا أَدْرَاكَ مَا هِيَهْ: “আর আপনাকে কিসে জানাবে সেটা কী?”: হে রাসূল! সেটি আসলে কী এ ব্যাপারে আপনাকে কোন বস্তু অবহিত করবে?

১১- نَارٌ حَامِيَةٌ: “অত্যন্ত উত্তপ্ত আগুন।”: সেটি হচ্ছে চূড়ান্ত উত্তপ্ত আগুন।